১.
আমাদের কোন ঘর বাঁধা ছিল না কোনদিন
দুটো বাড়ি ছিল আলাদা আলাদা
দুটো পরিবার, যে যার মতো
শুধু একটা নদী আমাদের ছুঁয়ে বয়ে যাচ্ছিল নিজের মতো করে।
২.
আমি তার পাশে আপেল বাগান করলাম।
তুমি কারখানা। আসলে তুমি ভবিষ্যৎ শুধরে দিতে চেয়েছিলে।
অথচ দেখো, নদীর জল কাজে এল না কারখানায়। শুকোতে লাগল দিনে দিনে।
আমি ছাতা ধরে রেখেছিলাম তবু রোদ আটকাতে পারিনি।
৩.
কার্নিভাল শুরু হল। ঠা ঠা করছে আলো।
জিরো ফিগার থেকে ক্রমশ কঙ্কাল হওয়ার ঝোঁকে
ঝাঁপিয়ে পড়েছ ঝড় জল মেঘ।
নদীটার বুকে দেখা দিয়েছে চর। তুমি ওখানেও আরও একটা কারখানা তুলবে বলেছ।
৪.
আমাদের আর বাঁধা ঘর হয় নি।
নদীটাকে বাঁচাতে আমি নিয়ে গেলাম ঝরণার কাছে।
৫.
যে নদী ঠান্ডা হওয়ার মতো জড়িয়ে নিত আমাদের
তোমাকে বাবা, আমাকে মা বলে ডাকত
তাকে আমরাই ভাগ করে দিলাম খন্ডে বিখন্ডে!
===================
বাবা মা পারলেন না আর।
রাস্তা বাগান নর্দমা।
ঝরা পাতা তুলতে তুলতে হাঁপিয়ে গেলেন।
খাঁ খাঁ করত হাওয়া...
বেচে দিলেন তড়িঘড়ি!
ওদের হাতে নতুন হল ড্রয়িং
নীল পর্দা…
কিচেনে আরও একটা বেসিন।
কতবার লুকিয়ে দেখেছি দূর থেকে
সুপুরি পাতার আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত...
ক্রিসমাস
========================
পীচ ফলের ওপর গড়িয়ে পড়ছে মধু
জেনে বুঝে তুমি গুটিয়ে নিচ্ছ শার্ট।
টেবিলে সার্ভ করি মিক্সড ফ্রুট স্যালাড
লাল মোমবাতি
কেঁপে কেঁপে ওঠে….
ক্রমশ ঠান্ডা হয় রাত!
সকলে ঘুমোলে ঠিক বুড়ো সান্টা আসে,
চুপি চুপি তুলে নেয় হাতের পেরেক।
বিয়ের সাতবছর পর
রাস্তায় পাথর ছিল কিছু।
হাত ধরে পেরিয়ে গিয়েছিলাম।
ঝর্ণার শব্দ আসছিল দূর। পা টিপেটিপে
গিয়ে দেখি হাতটা ছেড়ে গেছে কখন….
কত সিঁড়ি। নেমে গেছে নীচে।
যেখানে হারিয়ে যাচ্ছে লাল উলের গোলা,
তার মুখে জ্বলন্ত আগুন…
ছাই হয়ে যাবে জ্বলেপুড়ে।
রেলিংটা ধরি।
জং ধরা নড়বড়ে কাঁধ
দাঁত বের করে আমাকেই ‘ সাহায্য’ বলে...
বিজ্ঞাপনে বিশ্বাসী নই।
ছেড়ে দিতে পারি সব…
আসলে মা যে শিখিয়েছিল,
সেলাই খোলাটা নয়, বোনাটাই শক্ত ভীষণ !
বারবার কেঁপে ওঠে ঐ পিপুলের ডাল
===============================
পঁচিশটা বছর।
পিপুল গাছের মতো বাড়িটা
আলো আঁধারের দস্যিপনা দেখেছে নিশ্চুপ!
বাবা মা পারলেন না আর।
রাস্তা বাগান নর্দমা।
ঝরা পাতা তুলতে তুলতে হাঁপিয়ে গেলেন।
খাঁ খাঁ করত হাওয়া...
বেচে দিলেন তড়িঘড়ি!
ওদের হাতে নতুন হল ড্রয়িং
নীল পর্দা…
কিচেনে আরও একটা বেসিন।
কতবার লুকিয়ে দেখেছি দূর থেকে
সুপুরি পাতার আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত...
দাঁড়িয়ে আছে একা বাবার শেওলা ধরা পাঁজর
তারপর, আত্মহত্যা করল
পাঁজরের ভেতর।
সবটা নীল! বাবার রক্তঘাম। মায়ের বাগান।
জলের দিকে তাকিয়ে থাকি আমি,
বারবার যেন কেঁপে ওঠে ঐ পিপুলের ডাল!
No comments:
Post a Comment