জিরো বাউন্ডারি কবিতার তৃতীয় বর্ষ/ দ্বিতীয় সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখ। দুটো কবিতা বা কবিতা বিষয়ক মৌলিক লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেলে-0boundarykabita17@gmail.com

ব্লগে অনুসন্ধান করুন

রুমা ঢ্যাং অধিকারী






লেখার আনন্দ
ভিস্ওয়াভা সিম্বোর্স্কা (পোলিশ কবি)
==================================


তবে অঙ্কনশীল এ হরিণীটি কেন ঘুরছে বিরচিত এইসব বনের ভেতর? 
সে কি কেবলই ঝরণা থেকে গড়িয়ে আসা লেখ্য জল পানের জন্য
যে জল তার নরম মুখবন্ধের জেরক্স কপি বয়ে বেড়ায় নিজের পিঠেতে ?  
এখন সে কেন মাথা তুলল; অশুভ কিছু কি শুনতে পেল? 
চরম বাস্তব থেকে ধার করা চারটে শীর্ণ পায়ে ভর দিয়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল
আমার আঙুলের ডগায় খুঁচিয়ে তুলল তার কান 
এখন নীরবতা এই শব্দটিও খচখচ করছে সাদা কাগজ জুড়ে 
এবং বিভক্ত করছে গাছের ডাল
যেগুলি একসময় "বন" শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। 

অপেক্ষায় শায়িত থাকা, পরে খাতার সাদা পাতায় হঠাৎ করে ধাবিত হওয়া,
এসব অক্ষর সবসময় ভালো হয় না
খণ্ডবাক্যের থাবা তবুও অধীনস্থ 
তারা হরিণীটিকে কখনও দূরে যেতে দেবে না। 

প্রতিটা কালির ফোঁটা ধারণ করে থাকে শিকারীর এক উজ্জ্বল অনুপূরণ, 
দৃষ্টিশক্তির পিছনে সজ্জিত তাদের ট্যাড়া চোখ,
যে কোনও মুহুর্তে ঢালু কলম বেয়ে তারা ভিড় করতে প্রস্তুত,
হরিণীটিকে তারা ঘিরে ধরে এবং আস্তে আস্তে বন্দুকগুলো তাক করে।

এখানে জীবন যে নেই তারা ভুলে যায় সেসব।
অন্য সব বিধান, সাদার ওপর কালো, উপার্জিত হয়।
কিন্তু যতটা আমি বলব ততটাই তো দীর্ঘ সময় নেবে চোখের পলক,
এবং, আমি যদি চাই, ক্ষুদ্র অনন্তকালের মধ্যে ভাগ করে দেব,
পুরো বুলেটকে থামিয়ে দেব তার মাঝপথে।
যদি না আমি আদেশ দিই কোনকিছুই ঘটবে না কখনও,
আমার আশীর্বাদ ছাড়া, একটা পাতাও মাটিতে চুমু দেবে না,
একটা ঘাসের ফলকও মাথা ঝোঁকাবে না ছোট্ট সেই খুরের পূর্ণচ্ছেদের অন্তরালে।

তারপরেও কি একটা বিশ্ব আছে 
যেখানে ভাগ্যের বিধাতারূপে পরিপূর্ণভাবে শাসন চালাতে পারি?
সময়ে সময়ে চিহ্নের শিকলে আবদ্ধ থাকতে পারি?
আমার হুকুমে কি একটাও অস্তিত্ব হয়ে ওঠে অনন্ত? 

লেখার আনন্দ।
সংরক্ষণের ক্ষমতা।
একটা মরণশীল হাতের প্রতিফল।



**  ভিস্ওয়াভা সিম্বোর্স্কা ছিলেন একজন পোলিশ কবি, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক এবং ১৯৯৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত।

No comments:

Post a Comment