জিরো বাউন্ডারি কবিতার তৃতীয় বর্ষ/ দ্বিতীয় সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখ। দুটো কবিতা বা কবিতা বিষয়ক মৌলিক লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেলে-0boundarykabita17@gmail.com

ব্লগে অনুসন্ধান করুন

সুপ্রীতি বর্মন




প্রজাপতির মুক্তি
=====================


অভুক্ত প্রেমিকার সোহাগ ছটফটানি বৃশ্চিক দংশন, 
প্রতীক্ষিত সোহাগের আলিঙ্গন মধ্যরাতে আটপৌরে বিছানা।
প্রজাপতি উড়ে বসবে কবে, 
অনিশ্চয়তায় বুকে ঢেঁকির পাড় ভাঙে, 
আদৌ কি তুমি শুধু আমার হবে, না নিছক শুধু কল্পনা।।

ঘর্মাক্ত ল্যাম্পপোস্টে জং ধরার অপেক্ষায়, 
লেপ্টে লেপ্টে তোমার আমি, তোমাতেই সাগর শুকিয়ে যায়।
হাতের তালু উপচে পড়ে তোমার দৃঢ়মুষ্ঠির খপাৎ, 
আমার বক্ষে নদীর স্রোতে বুকে বুকে লেগে থাকা প্রীতি।।

শুনশান রাত গতরাতের মোহাবিষ্ট দস্যিপনায়, 
ধেঁবড়ে গেছে সিঁদুর, আঁজলা ভরে গুটাতে ব্যস্ত স্বামী সোহাগ।।

নগ্ন দেহের খাঁজে অশ্রুধোঁয়া গোলাপ, তুমি শুধু আমার।
গর্হিত অপরাধ উচ্ছ্বাসের ফেনা, সব অবসাদ আজ ঢালতে লেগেছো গহ্বরে, আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি তোমাকে নিতে থেকে।।

মঞ্জুরীর আবছায়ায় মান্ধাতার শ্লথ চিঁড়ে, 
সমগ্র পৃথিবীর গ্রাস, টালমাটাল পায়ে নববধূর চুলের ঘ্রাণ।
হুমড়ি খেয়ে গাঁই গাঁই অনুকম্পনে দীর্ঘদিন বিরহফোড়ন শোলমাছ।
একেক গরাসে স্বাস্থ্য তুলে দেবে।
রুগ্ন জীবনে।।

তোমার আবহমান অভ্যাস শুধু আমি।
নুয়ে পড়া অধরা ওষ্ঠে আলাপচারিতায় হুটোপুটি, 
ঘ্রাণ শুধু তোমার ছোঁয়া।

বৈরাগী বাতাসে মুখভার অন্তর্বাস আত্মসাৎ।
গোধূলির যাপনচিত্র প্রেমালাপ, প্রাঙ্গনে অভিসার স্বপ্নবালিকা।
নিরীক্ষণে কালভার্ট সন্দিহান অণ্বেষন ইলশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
আসন্ন পরিনতি নোঙ্গর ফেলা নিঃসঙ্গ নৌকা পেল, 
যৌবন সাঁকোয় সিঁদুরে মুক্তি।।








উত্তরাধিকারী



উত্তরার জরায়ুর শেষ সম্বল অভিমন্যুর শেষ চিহ্ন।

বীর যোদ্ধা মহাপরাক্রমে কিন্তু সান্ধ্যআগমনে, 

কুরুক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে পিঠে ছোরা, 

বিশ্বাসঘাতকতার, পরিশেষে গগননিনাদীর বুকফাটা ব্যঙ্গাত্মক হাসি, 

সত্য ও নিষ্ঠা ধরাশায়ী।

উত্তরার সোহাগের প্রস্ফুটিত কুসুম, 

ধিকিধিকি বৃদ্ধপ্রাপ্ত আগামী পান্ডব বংশের 
একমাত্র জাজ্জ্বল্যমান প্রদীপের শিখা, 

উত্তরাধিকারী আগমনে থৈ থৈ সুখ, 

মিষ্টান্ন সাড়ম্বরে প্রজাগনে বিতরন কল্পনা।

কষ্টার্জিত তার আগমন পথ শুষ্ক মাতৃহৃদয়, 

চোখের জলে সিক্ত হতে বঞ্চিত তার, 

মাতৃত্বের ক্ষুধা।

শেষ সম্বল স্বামীর ঐকান্তিক প্রনয়াষ্পদ, 

তাকে ছাড়া কল্পনাতীত আমার বৈধব্যের আগামী।

তোর নিষ্পাপ হাসিতেই খুঁজে পাবো স্বামীর প্রেম, 

কিন্তু ওতো প্রেম সইলো না কপালে, 
অতিরিক্ত পাষানপ্রস্তর বিধির অমোঘ নিয়মে, 

সন্তানসুখ নিলো কেড়ে।

সদ্যোজাত ক্রন্দনহীন শিশু দাইমার কোলে,  
নিষ্প্রান হিমশীতল মৃতপ্রায় পর্নমোচী।

আচমকা নিদ্রায় বিনা মেঘে বজ্রাঘাত, 

অশ্বত্থামার কূটরণকৌশলে ছাড়া, 

বাণ পুনরায় ফেরাতো জনহিতে, 

উত্তরার গর্ভপাতে শেষ আশ্রয়।

হায়রে কপাল পান্ডবকুল সত্য ও ধর্ম রক্ষার্থে, 

দিনের পর দিন কুরুক্ষেত্রে স্বজনবিয়োগ, 

শুধু তাই নয় অপরাধের ঐকান্তিক ইন্দ্রজালে, 

একের পর এক সকল পুত্রগণের রষা দড়ি বেঁধে, 

মুন্ডপাতে রক্তাক্ত দেহ শায়িত ভূতলে।

শেষ প্রদীপ অভিমন্যুর সন্তান, 

সেটাকেও ঈশ্বর নিল কেড়ে।

দিতে হলো অবশেষ সত্যের দাম।

ঋন কুরুক্ষেত্রের রক্তে ভেজা মাটি।

উত্তরার আত্মচীৎকারে দিগন্ত শোক, 

ঝড় বাদলের দুর্যোগ আঁধার রাতে।

কেশবের ধুন্ধুমার গতি রথের চাকায় মারপ্যাঁচ, 

আগামী শোকে অনভিজ্ঞ সুভদ্রা দাদার সাথে।

পঞ্চপান্ডব নির্বিকার দ্রৌপদীর পাল্টা জবাবে, 

সন্দিহান অণ্বেষন মনেতে একই কথা, 

কেশব তুমি কোথায়।

হঠাৎ সকল দোলাচালার নিরসন, 

মায়ের চোখের জলে ঈশ্বর ও অসহায়।

কৃষ্ণা আজীবন সকল পুণ্য একত্রিত করে, 

সকল ফলের গ্রন্থনে চায় ভগবান বিষ্ণুর স্নেহাশীষ।

বিষ্ণুর অমোঘ জ্যোতি কিরনমালার চক্রবুহ্যে, 

আবেষ্টিত কেশব লালায়িত মৃত সন্তানে প্রান ফেরাতে, 

দিব্য করমূলে অঝোর স্রোত কিরণরেখায়, 

উজ্জীবিত নব প্রান নিষ্পাপ শিশু।

ক্রন্দনে ফেটে পড়ে অলিন্দে অলিন্দে, 

আগমনী খুশীর জোয়ার উত্তরাধিকারীর।

তুমিই তো সার্থক তোমার নামকরন পরীক্ষিত।

কৃষ্ণা কোলে আগামী প্রজন্মের নাচন, 

পান্ডবকুলের চোখে অনিন্দ্য দুত্যি, 

সত্য তুমি সত্যিই সার্থক।

শেষ ভালো যার, 

সব ভালো তার।









No comments:

Post a Comment