রাজহাঁসের ঠোঁট সমীপেষু
===================================
ত্রিমাত্রিক মাধ্যমে আপনার সুউজ্জ্বল উপস্থিতি প্রায়ই চোখে পড়ে৷ মধ্যম,সেজো অথবা ছোটে গোছের পত্রিকায় গৌরবান্বিত লেখকসূচিতে আপনার অন্তর্ভুক্তিও৷ সপ্তমে বাজতে থাকা আপনার ঢাক এদিক সেদিক থেকে অল্পবিস্তর কান আসে বইকি৷ আপনার যোগাযোগ সুত্র এবং আনুষাঙ্গিক বন্ডিং অম্বুজা সিমেন্টের থেকে কোনো অংশে কমজোর নয়, সেকথার সর্মথনে কমেন্ট বক্সে আপনার অনুগামীদের চাটুকারিতার বহরে চোখ বোলানো যেতে পারে৷ সমবচ্ছর সাহিত্য বিষয়ক আপনার ব্যস্ত সেডুইলের কথা সকলেই জানা৷ সাজানো মঞ্চে গমগমে মাইক্রোফেনের সামনে পুরুষ ব্যাঙের মতো ফুলে ওঠা গলা অথবা ব্যানারের নীচে নামী দামীদের পাশে আপনার জায়গা করে নেওয়ার ছবিগুলো দেখতে দেখতে বুকের ছাতি না ফুলিয়েও ছাপান্ন ইঞ্চি হয়ে যায়৷
মফ্সলের ধুলো-ধোঁয়া আর ডেলিপ্যাসেঞ্জারির ধাক্কা খেতে আপনি শিখে গেছেন তুচ্ছকে এড়িয়ে চলা আর সুউচ্চের চারপাশে কক্ষপথ নির্মাণের সঠিক কৌশল৷ মাস্টারমশাই বলতেন—
'সাধ্যমত নামিয়ে রাখো শিখাটাকে
ভোরের আলো দেখতে পাবে ঠিক৷
আগে ভালো করে শোখো লেখাটা,
সাহিতের রাজনীতি!
ওটা জল পেরোলেই শিখে যাবে'৷
এক বাঁও, দুই বাঁও, তিন বাঁও, সাড়ে তিন বাঁও... জল অথৈ জল!
এত বিজ্ঞাপনে এই বিশ্বায়নের মাঝে বড় জানতে ইচ্ছে করে, কী লিখেছেন আপনি যা আপনাকে অমরত্ব দেবে! কী আছে আপনার লেখায় যা আপনাকে স্বতন্ত্র করবে পদাতিক ভিড় থেকে অথবা যা না লিখলে অনেক কিছু মিস করে যেত এ শতাব্দীর মানুষ! তেমনই একটি হয়ে ওঠা কবিতা পড়ার জন্য অনেকদিন মরুভূমি হয়ে আছে চোখ!
ব্যক্তিগত শূন্যতায় উদ্ভুত আবেগ কখনো স্বীকার করে না বশ্যতা কষ্টিপাথরের কাছে তবে ঝিনুকের পেট আর মহাকালের সম্পর্ক বহু প্রাচীন৷ সে কথা তিন নম্বর চোখের অজানা নয়৷ এই প্রচার এই পরিসর আর লবি সিস্টেমের বাইরে পড়ে থাকা কবি কখনো একান্ত অভিমানে বলে ওঠেন---
হাত ঘড়ির নিচে বাকি উত্তাপে
আমি পেরিয়ে যাবো শীত'...
No comments:
Post a Comment